খন্দকার আব্দুল্লাহ : আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দা, বটি, চাপাতি, ছুড়িসহ মাংস কাটার সরজ্ঞাম তৈরি ও বিক্রিতে শেষ সময়ে ব্যস্ততা পার করছেন ফরিদপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে।
বছরের অন্য দিনগুলোতে তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানী আসলে বাড়ে তাদের কর্মব্যস্ততা। এসময় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হয় তাদের এবং বেড়ে যায় বেচা কেনা। যা দিয়ে পুরো বছর চলতে হয় তাদের। তবে কয়লা, লোহাসহ সকল জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় আগের মত তেমন লাভ হয়না বলে জানান কামাররা। একসময় কামারদের ব্যবসা জমজমাট থাকলেও বর্তমানে বিভিন্ন ওয়ার্কশপে তৈরি হচ্ছে রেডিমেড দা, বটি, কাস্তেসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। এখন আর এই ব্যবসায় লাভ নাই, শুধু কুরবানি আসলেই বেচাকেনা হয়। তাছাড়া বছরের অন্য দিনগুলো কষ্টে কেটে যাচ্ছে।
বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তিতে টাকা নিয়ে তা পরিশোধ করতে করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ঝুগছে। তবে এখন পর্যন্ত বেচাকেনা মোটামুটি ভাল হচ্ছে বলে জানান তিনি। বলেন, প্রতি বছর কুরবানির ঈদে কাজ বেশি হয়। যে কারনে কুরবানির ১ মাস আগে থেকেই কাজ বাড়তে থাকে আমাদের। সারাবছর তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানির ঈদে একটু বিশ্রামেরও সময় পাইনা। তাই কুরবানির ঈদের আগে থেকেই অনেক নতুন সরঞ্জাম তৈরি করে রাখি। কারণ অনেকেই নতুন সরঞ্জাম বানানোর সময় না পেয়ে সেগুলো কিনে নেয়।
বোয়ালমারী বাজার এলাকার কামার শ্রমিক মুকুল ঘোস জানান, প্রায় ২০ বছর এই পেশার সাথে যুক্ত আছি। প্রতিবছরই এই সময়ে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। দিন যত গড়াবে ব্যস্ততা ততোই বাড়ে। আর এমন ব্যস্ততা ঈদের আগের রাত পর্যন্ত চলবে। তবে অনেক কস্টের পর যখন ইনকাম ভাল হয় তখন সব কস্ট ভূলে যাই।
সরেজমিনে দেখা যায় প্রতিটি দা তৈরিতে প্রকারভেদে মজুরি নেয়া হচ্ছে ৬০০-৭০০ কেজিতে বিক্রি হয়। চাকু তৈরিতে নেয়া হচ্ছে ১২০-২৫০ টাকার মত। বড় ছুড়ি তৈরিতে নেয়া হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকার মত। এছাড়া বটি তৈরিতে নেয়া হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকার মত।
এদিকে ক্রেতারা জানান, প্রতি বছরই করুবানি আসলে দা, বটি, চাপাতি, ছুড়িসহ আরো অনেক জিনিসপত্র কিনতে হয়। তবে এবছর লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি হওয়ায় গতবছরের চাইতে বেশি দাম দিয়ে জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে তাদের।
তিনি আরো বলেন, পোড়া পাথর কয়লা, কাঠ কয়লা, রৎত, পাথর, লোহা এগুলোর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় ব্যবসা তেমন হচ্ছে না। তবে দাম কমলে স্বস্তি ফিরবে।
0 coment rios: